অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন, বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি সংস্থার ভারতীয় সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে লেখা এক ই-মেইলে বলেছেন, সংস্থাটি নির্ভয়ে ও নিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশন চালিয়ে যাবে। দিল্লি আর মুম্বাইতে বিবিসির দপ্তরে আয়কর বিভাগের তল্লাশির পরে এই ইমেইলটি এসেছে বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে।
বিবিসি জানিয়েছে, তারা ওই তদন্তে আয়কর বিভাগের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে। ভারতে বিবিসির কর্মীরা যে সাহস দেখিয়েছেন, তার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে টিম ডেভি বলেছেন, নিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশনের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কিছুই হতে পারে না।
২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গার সময়ে বর্তমানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী, সেই সময়ে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র সম্প্রচার করে বিবিসি। ওই তথ্যচিত্র ভারতে সম্প্রচার করেনি বিবিসি। সেটি শুধুমাত্র যুক্তরাজ্যের দর্শকদের জন্য প্রচার করা হয়েছিল।
ভারত সরকার ওই তথ্যচিত্রটিকে ‘শত্রুতাপূর্ণ অপপ্রচার’ বলে আখ্যায়িত করে এবং ওই দেশে যাতে তথ্যচিত্রটি দেখা না যায়, সেই ব্যবস্থাও নেয়। অনেক মানুষ ওই তথ্যচিত্রটি সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করে শেয়ার করছিলেন।
টিম ডেভি বলেছেন, ‘সংবাদকর্মীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে আর নিরাপদে তাদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করবে বিবিসি। ভয়-ভীতি ছাড়া, নিরপেক্ষভাবে সংবাদ পরিবেশনের থেকে আমাদের কাছে আর কোনও কিছুই বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিশ্বব্যাপী আমাদের দর্শকদের কাছে স্বাধীন আর নিরপেক্ষভাবে সত্যটা পৌঁছিয়ে দেওয়াই আমাদের কাজ। আমাদের লক্ষ্য কীভাবে সবথেকে সৃজনশীল উপায়ে আমরা তা দর্শকদের উপহার দিতে পারি। এই কর্তব্য থেকে আমরা কখনই বিরত থাকব না।’
ওই ইমেইলে তিনি আরও লিখেছেন, ‘একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চাই। বিবিসির কোনো অ্যাজেন্ডা নেই। আমরা একটা উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করি। প্রথম উদ্দেশ্যটা হলো, নিরপেক্ষ সংবাদ ও তথ্য পরিবেশন, যাতে মানুষ তার চারপাশের দুনিয়াটাকে ভাল করে বিশ্লেষণ করতে পারেন।’
ভারতের আয়কর বিভাগ তিন দিন ধরে বিবিসির দুইটি দপ্তরে তল্লাশি চালিয়েছিল, যেটিকে তারা ‘সার্ভে’ বলে বর্ণনা করছে। ওই ‘সার্ভে’ থেকে তারা আয়কর সংক্রান্ত বেশ কিছু অসঙ্গতি পেয়েছে বলেও জানিয়েছে আয়কর বিভাগ। বিবিসি জানিয়েছে, তাদের কাছে আয়কর বিভাগ থেকে সরাসরি যে সব প্রশ্ন করা হবে, তার উপযুক্ত জবাব তারা দেবে।
যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে বিরোধী সংসদ সদস্যরা ওই আয়কর হানা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও যুক্তরাজ্যের বিদেশ মন্ত্রক ভারতের আয়কর বিভাগের ওই অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও তারা জানিয়েছে, ওই ঘটনার ওপরে নজর রাখা হচ্ছে ও বিবিসির স্বাধীন সাংবাদিকতাকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করছে।
Leave a Reply